মঙ্গলবার, ৬ নভেম্বর, ২০১২

কলাবতী মুদ্রার বারমাস্যা ২০১০-২০১১, Annual Report of Kalaboti Mudra 2010-2011


(পঞ্চমাংশ)
চিত্রসীমান্তঃ অসম-বাঙলা চিত্রকলা শিবির এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান
বিশদ পরিকল্পনা                                                         আমন্ত্রণ পত্র
পুজো শেষ হতে না হতেই আসম ভবন থেকে কলাবতী  মুদ্রা দপ্তরে খবর আসে অসম সরকার রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের ১৫০ বছর উপলক্ষ্যে কলকাতায় একটি চিত্র শিবির করতে ইচ্ছুক. আসম ভবন চায় কলাবতী মুদ্রা এই কাজটি করুক.  কলাবতী মুদ্রা এবাবদে রাজ্য সংগীত আকাদেমিকে সঙ্গী করতে অনুরোধ করে. অসম ভবনের অনুরোধে সেও এই কাজে সঙ্গী হয়.
হেলির সময় মার্চ মাসের শেষের দিকে পাঁচদিন ব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি ঠাকুরবাড়ির প্রাঙ্গণে  অনুষ্ঠিত হয়. এই অনুষ্ঠানে অসমের চিত্র শিক্ষার্থীরা এবং কলকাতার চিত্র শিক্ষার্থীরা অংশ গ্রহণ করে. কলাবতী মুদ্রা উদ্যোগে একই সঙ্গে পট চিত্র নিয়ে একটি কর্মশালা এবং আলপনা নিয়েও একটি কর্মশালা আয়োজিত হয়. মণিমালা চিত্রকর এবং রবি বিশ্বাস এই দুটি কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন.
এই কর্মশালা উদ্বোধন হয় কলাবতী মুদ্রার শিল্পীদের নৃত্যের মাধ্যমে. প্রখ্যাত চিত্রকর ওয়াসিম কাপুর এই কর্মশালা উদ্বোধন করেন.  কর্মশালার অন্যতম আকর্ষণ ছিল চা-চক্র. এই অনুষ্ঠানে নানান প্রখ্যাত ব্যক্তিত্ব চা বিষয়ক আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন.
কলাবতী মুদ্রা ছাড়াও অসমের একটি নাট্য দল অসমীয়ায় রক্তকরবী উপস্থাপন করে. অসম ভবনের কর্মীরা বিহু নাচ প্রদর্শণ করে.
কলাবতী মুদ্রা নৃত্য গুরুকুল
কলাবতী মুদ্রা প্রতিবছরের মতই এ বছরও তার নৃত্য গুরুকুলে প্রায় ৫০ জনেরও বেশি শিল্পী সারা বছর ধরে শিক্ষা গ্রহণ করেন. কলাবতী মুদ্রা প্রধান ড. ললিতা ঘোষ ছাড়াও অনেক শিল্পী এই গুরুকুলে তাঁদের অধীত বিদ্যা উজাড় করে দেন.
এ বছর গণিপুর শীতলা হাইস্কুলে কলাবতী মুদ্রা তার বিদ্যালয়টি বন্ধ করে দেয়. এর একটি বড় কারন অর্থাভাব.
এবছর পুজোয় কলাবতী মুদ্রা দিল্লিতে অনুষ্ঠান করতে পারেন নি তার বড় কারন কলাবতী মুদ্রা যে সব মন্ডপ বানিয়েছে, সেখানে তার শিল্পীরা প্রদর্শণ করেছেন. এই প্রথম কলকাতার মন্ডপে থিমের সঙ্গে ভাবনা অনুযায়ী অভিকর শিল্প প্রদর্শণেরও সুযোগ রাখা হয়েছে. ড. ললিতা ঘোষের নেতৃত্বে কলাবতী মুদ্রার সদস্যরা পুজো প্যান্ডেলগুলিতে নৃত্য প্রদর্শণকরেন.
২০১০-১১এর বছরটিতে কলাবতী মুদ্রা শিল্পীরা অন্য যেসব অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন
অসম বাঙলা উত্সব, রবীন্দ্র ভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, অসম ভবন, কলাবতী মুদ্রা, ১৭.৩.২০১১ - ২০.৩.২০১১
যাজপুর জেলা মহোতসব, ওড়িশা
যতীনদাস নগর স্পোর্টিং ক্লাব, বেলঘরিয়া, বৈশাখী উত্সব
শংকরদেব তিথি উত্সব, অসম ভাবন, কলকাতা
আলিদা স্কুল, বারুইপুর ধানুয়া
ভাষা ও চেতনা সমিতি - ১ বৈশাখ
জাগৃহি ক্লাব
দুর্গোত্সব, চতুর্থী থেকে দশমী
রামগড় রায়পুর ক্লাব, গড়িয়া
ঠাকুরপুকুর ক্লাব, ঠাকুরপুকুর
আপনালয়, মধ্যমগ্রাম
নর্থ ইস্ট ট্রেড এক্সপো, সন্টলেক
নিভা আনন্দ বিদ্যালয়,
সুন্দরবন লোক সংস্কৃতি উত্সব, জয়গোপালপুর গ্রামবিকাশ কেন্দ্র, বাসন্তী
সাঁওতাল সংস্কৃতি নথিকরণ কর্মশালা
দুঃখের খবর. এ বছর গুরু বাজার হেমব্রম তার দেহ ছেড়েছেন. তাই এই কাজটি আপাততঃ বন্ধ রাখা হল. এর পর শুযোগ ঘটলে, সুযোগ্য গুরু পাওয়া গেলে, যিনি বাজার হেমব্রমএর মত ধৈর্য ধরে কাজটি শেখাতে পারবেন তাহলেই সেই আরব্ধ কাজটি নতুন করে শুরু করা যেতে পারে.
কলাবতী মুদ্রার সদস্যদের পক্ষে বাজার হেমব্রম এবং তাঁর পরিবারকে জানাই অপরিসীম শ্রদ্ধা আর ভালবাসা.
কারুশিল্পী সদস্যপদ
বঙ্গীয় পারম্পরিক কারু ও বস্ত্র শিল্পী সংঘকে কলাবতী মুদ্রা হস্ত, বস্ত্র এবং অভিকর শিল্পীদের সংগঠিত করতে সাহায্য করছে. আগামী বছরে এই সংগঠণটিকে সে সরকারি দপ্তরে পঞ্জীকরণ করতে সাহায্য  করবে যাতে সে জেলায় জেলায় সংগঠণ গড়ে তুলতে পারে.
তবুও  কলাবতী মুদ্রা  এই বছর থেকে নতুন এক সীমিত সংখ্যক গ্রাম শিল্পীদের সদস্য করকে উদ্যোগী হয়েছে. যে সব এলাকায় সে বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণ, কর্মশালা এবং নথিকরণের কাজ করেছে, সে সব এলাকার শিল্পীদের সে সদস্যপদ দান করেছে. এবং যে হেতু কলাবতী মুদ্রা কোনও সংগঠিত দান গ্রহণ করে না, সে হিতু বহু শিল্পী উদ্যমী হয়ে এই সংগঠণে চাঁদা দিয়েছেন.
আমরা কলাবতী মুদ্রার সদস্যরা কৃতজ্ঞ, যে গ্রাম শিল্পীদের জ্ঞাণ নথিকরণের কাজ করছি, সেই শিল্পীরাই এই সংগঠণের বাঁচার কথা ভাবছেন. এবং এই বছর থেকেই সে সীমিতাকারে এই চাঁদা তুলছে. 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন